সমীরণ ঘোষ-এর কবিতা
সম্ভাবনা
পাতাল থেকে একটা ভারি পর্দাও উঠে আসতে পারে
যদি তুমি পাতালের কেউ হও
যে ফলার ওপর শুয়েছিলে সেই হয়তো ষড়যন্ত্র
করলো টানা ছাপান্নবছর
মাথার ভেতর পাঁচহাজার অব্দের ঘুম নিয়ে কথা চলতেই পারে
কী এসে যায়, আর সত্যিমিথ্যের সেই সুড়ঙ্গ, যার ভেতর
তোমার কাটা আঙুল খ্রিষ্টপূর্ব শতাব্দী থেকে পড়ে
তাছাড়া পাতাল কোনো অমঙ্গল নয়। আর ভারি পর্দাও
নরকের সম্ভ্রান্ত প্রতীক। মর্ত্যের জানালা
থেকে এরকমই ক্ষুদ্র সম্ভাবনার কথা ভাবা যেতে পারে
শুশ্রূষা
পনেরহাজার শব্দের পরে নিশ্চিত কোনো বিরতি প্রয়োজন
চামড়া থেকে ছত্রাক ঝরানোর মতো কিছু বাক্যালাপ হোক
চামড়া থেকে শীত ফেরানোর মতো কোনো অদম্য নিশানা
পনেরহাজার শব্দের পর একটা চোখই তোমার কেঁদেছিল
পনেরহাজার শব্দের পর একটা পা-ই কেবল তুলতে পারোনি
পনেরহাজার ক্ষত তোমার দেখভাল করলো কতটা শতক
পনেরহাজার শব্দের পর একটা হাসপাতাল করে তোলো নিজেকেই
জাদুসন্ধ্যা
চমৎকার শুরুর বাক্সে তুমি কথাহীন কাচের টুকরো, হেসেছিলে
আমাদের প্রান্তিক জানলায় ধারালো আলোর রঙে নেমেছিল
বৃষ্টিশিরীষ। তারপর কত কত যুদ্ধনগর। কত পেট্রোলগঞ্জের
ঘরবাড়ি। পোড়া শহরের গায়ে ব্রাসের ঝরনা আর
বাণিজ্যতরণী গেল ক্ষুধামান্দ্যর দেশে
কথাহীন কাচের টুকরো তুমি পঁচিশবিন্দুতে ফিরে গেলে
বাক্যহীন ফলার নিশানা তুমি আপেল-বণিকের রাঁড়
জানলা থেকে যেটুকু ভাসান ততদূর ধাবমান সেতু
আর চমৎকার মৃতদেহ কোলে কেউ এক পদ্মাসনে বসে
ভাঙা দরজায় তুমি সিংভূম ফোটালে এত রুক্ষ্মশতক
আতাগাছ
আসা যাওয়ার পথে আমি একটা পেরেকই টেনে তুলতে
চাইলাম, যার বাস্তবিক কোনো আদলই ছিল না
কোনো এক সুরের দরজা অন্ধকার হয়ে চলে গেছে বহুদূর
কোনো এক পাল্লার আগুন নির্বিশেষ হাওয়ায় দুলছে
আতাগাছের নীচে দু’জন মেয়ে দু’রকম আতঙ্কের মুখোশ
পরে বসে। তারাও কী গুপ্ত শলাকার খোঁজে
মাত্রাহীন বুড়ো হয়ে গেল!
ফ্যাকাশে আতাগাছ পাঁশুটে ছবির ফ্রেমে পুড়ে
নিষ্পলক খুঁড়ে যাচ্ছে দুই গ্রস্ত নারীকে
No comments:
Post a Comment