অর্ণব সাহা


 

অর্ণব সাহার কবিতা

নীচু গিলোটিন


৫১
দিগন্তে বারুদ
আর, পর পর জ্বলন্ত কফিন
ভিতরে শোয়ানো আছে অভিশপ্ত অক্ষরের লাশ
আই.কার্ড-বিহীন, শুধু হৃৎপিন্ডে আদ্যক্ষর লেখা!


৫২
একটাই নম্বর, তোমরা তিনজনে ব্যবহার করো
আমি খেলনা তাস হয়ে তোমাদের কর্তৃত্বপরায়ণ
আঙুলে সুতোয় বাঁধা পুতুলের মতো ঘুরি-ফিরি
ডুবন্ত নৌকার মাঝি গলা-অব্দি-জলে সাঁতরায়

বাঁধের উপরে বসে লাটাই হাতে মজা দেখে কেউ
জানে, অল্পতেই ঘুড়ি বেমালুম কাটা পড়ে যাবে
মাঞ্জাবিহীন সুতো চামড়ায় দাগ বসিয়ে দেবে
রক্তে বিষক্রিয়া জানে শরীর, অদৃশ্য মহামারি!

আমি তোমাদের হাতে মিইয়ে যাওয়া ঠোঙার মতন
প্রতিভাবিহীন রাস্তা থেকে গলিপথে মিশে গেছি…


৫৩
ব্লগার অভিজিত-কে মারে ধারালো চাপাতি
আমাদের হৃৎপিন্ডে মণিমুক্তো নেই
ট্যাক্সির ভিতরে ঠোঁট মিথ্যে কথা বলে
মুক্তবাণিজ্যের শর্ত ভাইরাল, এম.এম.এস

রাগিণী, কিসের লোভে আমরা এতদিন
তোমার সিপিয়া রিলে বিশ্বাস রেখেছি ?
এরপরেও কোনওদিন সব অহং ফেলে
পথে নেমে, নিরুত্তাপ, দাঁড়াতে শিখব ?

পারব নির্ভয় অভিজিতের মতন
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে ছিন্ন শ্বাসনালি ?


৫৪
তোমাকে নিয়ে লিখতে শুরু করে
এ আমি কোন অরণ্যে পৌঁছলাম ?
এখানে মাটি বিষের চেয়ে নীল
রাস্তাগুলো শ্বাপদসংকুল

মজায় ছিল জীবনানন্দেরা
গ্লানিকে ওরা হতাশা দিয়ে ঢেকে
পান্ডুলিপি ট্রাংকে ভরে রেখে
দাঁড়িয়েছিল ট্রামের মুখোমুখি

মৃত্যু আজ হালকা হয়ে গেছে
মানুষ আরও তুচ্ছ পোকামাকড়
সামনে কোনও গোধূলিরেখা নেই
সপ্তরথী প্রতিটি বাঁকে বাঁকে


৫৫
আশিস নন্দীর স্বপ্নে আমিও একদিন
ঘর ছাড়ব বলে ফাটা রুকস্যাক গুছিয়ে
দরজায় পা রেখে দেখি স্বয়ং নিয়তি
মধ্যবর্তী ধাপগুলো সরিয়ে নিয়েছে

পুরোটাই অন্ধকার। সিঁড়িও উধাও
চক্কর কাটছে ক্ষীণ প্রদীপের আলো
পাল্প উপন্যাস থেকে গ্রাফিক নভেলে
হড়কে পড়ে গেছি, কোনও মাঝিমাল্লা নেই

যে হাত বাড়িয়ে দেবে, দোকানে বসিয়ে
মুখের সামনে ধরবে অযত্নের রুটি
পেট ভরানোর স্বপ্ন আমার ছিল না
স্বপ্নের লিমিট আমি ভাঙতে চেয়েছিলাম!

No comments:

Post a Comment

Facebook Comments