সুবল দত্ত

 

সুবল দত্তের কবিতা


শূন্যতা                       



১.

শূন্যতার বাঁ পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছি
যারা বসে প্রচুর শূন্যতা নিয়ে ডাইনে তারাই জীবনে প্রতিষ্ঠিত
শূন্যতাকে নানা রঙে নানা মূল্যে আগলে রেখেছে
বেশকয়েটি শূন্য নিয়ে ওদের মাংসল আয়ু
অনেকগুলি শূন্যের ভিতরে ঢুকে হা হা হাসি
অনেক যৌনতার ভিতরে ঢুকে শূন্য খুঁজে নিয়ে আসতে পারে
আমি শুধু শূন্যের বাঁ দিকে আপাত মূল্যহীন একা একা ভাবছি
আমরা তো সবাই মহাশূন্যে রয়েছি
আমাদের জীবনব্যাপী নাটক দেখার উচ্ছ্বাস  ক্রোধ ও বিকার
অনিয়মিত অসংখ্য শূন্য কল্পনা
তবু তো নিজেকে জানার চেষ্টায় শূন্যতার পাশেই রয়েছি




২.

যারা লোহা চেনে
লোহার ভিতরে খোঁজে নিজের প্রসার
এবার তারা জানুক লোহার ভিতরেও আছে অপার শূন্যতা
যারা নিজেকে জানে
স্পর্শ মাত্র লোহা সোনা হয়ে যাবে
তারা কিন্তু কখনোও লোহা খোঁজে না
তারা খোঁজে এমন মানুষ
যার রক্তে লোহিত কণা অসমান বড় ছোটো নয়
একটু আধটু গরমিল থাকলেও বা
ঘষে মেজে উজ্জ্বল সোনার রেত করে নেওয়া যায়






৩.

যারা ভাত উচ্ছিষ্ট ফেলে তারা জানেনা
কেউ কেউ উচ্ছিষ্ট ভাতের সাথে লোহার রেতও খেয়ে নেয়  হজমও হয়
তারা এও জানেনা যে ভাতটি শস্য হয়ে কোনোএক চাষীর খামারে এসেছিল
তারও পেটে বিশাল গহবর  তার শূন্য পেটে আগ্রাসী জৈবনিক খিদে
তার কাছে প্রেম অপ্রেম যদিও সমান
তবু সে অন্যকারো পেটের কথা ভেবেই পাকস্থলীর বিনিময় করেছিল



৪.

যারা নিজেকে জানার চেষ্টায় আছে
তাদের ঘুমিয়ে থাকতে বলা হল
অনবরত নিদ্রাতে হবে আত্ম পরিচয়
শরীরের ভিতর থেকে রক্ত নিংড়ে হাওয়া ভরে
শরীরকে খালি করে দিতে বলা হল
খুলির ভিতরে গর্ত নিভন্ত উনুন
মগজে যা কিছু ছিল সংক্রামক তেজস্ক্রিয় ছাই
সেসব নিষ্ক্রিয় করতে বলা হল
যাদের পেট বলে কিছুই ছিলোনা
তাদের চিনিয়ে দেওয়া হল পাকযন্ত্র
জানা গেল এমন এক বিস্ময়কর ইলাস্টিক বেলুন
যার অসম্ভব মারণ প্রসার ক্ষমতা
যার রক্ত শুকিয়ে গেছিল তাকে বলা হল
তোমার অন্দরে আছে অসংখ্য রক্ত পিপাসু উপনালী
যারা নিজেদের বংশ চিনেছে
তারা ঘুমোতে যাবার আগে জানল
পরম্পরা তার জন্য ক্লেদ ছাড়া আর কিছুই রেখে যায়নি
তাই ঘুম থেকে জেগেই নতুন পৃথিবী গড়তে হবে এই পণ




 

No comments:

Post a Comment

Facebook Comments